
মুক্তাগাছায় দাওগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, বিক্ষোভ মিছিল ও উত্তেজনা
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় ৮ নং দাওগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান ও সাবেক কমিটির নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ইউনিয়নের গোদাপাড়া খাসেড় মোড়ে পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে তর্ক-বিতর্ক হয়, যা পরবর্তীতে হাতাহাতি, কিলঘুষি এবং লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের তথ্য অনুযায়ী, বিএনপির সাবেক কমিটির একাংশ দাওগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব এবং আওয়ামী লীগপন্থী পুনর্বাসনের অভিযোগ এনে একটি বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। তারা বিকেল নাগাদ গোদাপাড়া খাসেড় মোড়ে জড়ো হতে থাকেন।
একই সময়ে বর্তমান কমিটির সভাপতি মাওলানা আব্দুল লতিফ ও তার অনুসারীরা ঐ কর্মসূচিতে অংশ নিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। একপর্যায়ে সাবেক কমিটির নেতাকর্মীরা বর্তমান কমিটির লোকজনের ওপর চড়াও হয় এবং ধাক্কাধাক্কির পর শুরু হয় হাতাহাতি। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হলে লাঠিসোটা নিয়ে এক পক্ষ অন্য পক্ষের ওপর হামলা চালালে বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীরা স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হন।
সংঘর্ষের পরপরই সাবেক কমিটির নেতারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন, যেখানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল লতিফ মাস্টার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল মালেক শাহীন, বিএনপির সদস্য মোঃ আব্দুল মান্নান, হাবিবুর রহমান গুডু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন মোফা, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শহীদুল ইসলাম দুলাল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল মালেক শাহীন, ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রমজান আলী, যুবনেতা নাসির উদ্দীন মণ্ডল, আনোয়ার হোসেন, কাজী নজরুল, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আহমেদ আলামিন ও সাধারণ সম্পাদক আলামিন হুসাইনসহ আরও অনেকে।
মিছিলটি খাসেড় মোড় থেকে শুরু হয়ে কাঠগোলা বাজার প্রদক্ষিণ করে পুনরায় খাসেড় মোড়ে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে নেতাকর্মীরা বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে তাদের বিলুপ্তির দাবি জানান।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নেতারা বলেন, “বিএনপির সদস্য মোঃ আব্দুল মান্নানের ওপর বর্বরোচিত হামলা এবং হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। বর্তমান কমিটির ছত্রছায়ায় বিএনপির নামে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব এবং আওয়ামীপন্থী পুনর্বাসন করা হচ্ছে, যা আমরা মেনে নিতে পারি না। এই অবৈধ কমিটিকে বিলুপ্ত করে একটি গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠন করতে হবে।”
অন্যদিকে, ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান সভাপতি মাওলানা আব্দুল লতিফ বলেন,”আমি বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তাই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু যা ঘটেছে, তা দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। আমি উপজেলা কমিটির কাছে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার প্রত্যাশা করছি।”
সংঘর্ষ ও বিক্ষোভের কারণে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপের খবর পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা থাকলেও সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে।
তবে ভবিষ্যতে যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রশাসনের নজরদারি প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে দাওগাঁও ইউনিয়নের রাজনীতিতে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় বিএনপির দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত সমাধান চায় তৃণমূল নেতাকর্মীরা ।